এবিএনএ : জঙ্গিবাদ নির্মূলে সহযোগিতার নামে কিছু বিদেশি অতিথি মায়াকান্না করছেন বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক।
তিনি বলেছেন, ‘ধর্মীয় উগ্রতা কিংবা জঙ্গিবাদের কথা বলে সিরিয়া, আফগানিস্তান, পাকিস্তানসহ মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা চলছে। সেখানে জঙ্গিবাদ মোকাবেলার নামে উল্টো সংঘাতময় পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। বাংলাদেশেও একই প্রয়াস চলছে। কথিত জঙ্গিবাদের নামে, আইএসের নামে খুন ও হামলা করা হচ্ছে। এসব নির্মূলে সহযোগিতা করতে কিছু বিদেশি অতিথি মায়াকান্না করছেন। যেন মায়ের চেয়ে মাসির দরদ বেশি।’
ধর্মীয় চেতনায় জঙ্গি তৎপরতা প্রতিরোধে ধর্মীয় নেতাদের নিয়ে রাজধানীর ফার্মগেট কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার সকালে আয়োজন করা হয় ধর্মীয় সম্প্রীতি সম্মেলন। সেই সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এ সব কথা বলেন তিনি।
এ কে এম শহীদুল হক বলেন, ‘বিদেশি বন্ধুদের মনে রাখা উচিৎ দেশীয় নাগরিকদের মতো তাদেরও এ দেশের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকা উচিৎ।’
উপস্থিত ধর্মীয় নেতাদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘এ দেশের জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় আপনাদের ভূমিকা একান্ত দরকার। আপনারা এগিয়ে এলে জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।’
আইজিপি বলেন, এ দেশের মানুষ ধর্মান্ধ নয়, ধর্মপ্রাণ। সুতরাং এ দেশে এ ধরনের অপপ্রয়াস কখনো বাস্তবায়ন হবে না। দেশে যারা জ্বালাও পোড়াও করেছে, তাদের প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে। এখন তাদেরই কেউ কেউ এ ধরনের গুপ্তহত্যার মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে। তাদেরও প্রতিরোধ করা হবে।
আইজিপি বলেন, যখন একটা দেশের সামাজিক-ধর্মীয় মূল্যবোধ নষ্ট হয়ে যায়, তখনই অস্থির পরিবেশ তৈরি হয়। প্রত্যেক নাগরিককে সচেতন থাকতে হবে। বসে থাকলে চলবে না। প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। ঐক্যবদ্ধভাবে অপচেষ্টাকারীদের প্রতিহত করতে হবে।
তিনি বলেন, দেশের ৮০ শতাংশ জঙ্গিবাদী ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করেছে পুলিশ। এখনো ২৩ জন জঙ্গি সদস্যের বিচার উচ্চ আদালতে রায়ের অপেক্ষায় রয়েছে। আদালতের রায় দেখে পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, যেকোনো ধর্মের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক কথা, অপপ্রচার দেশীয় আইনে অপরাধ। আবার যারা ইসলামের নামে জঙ্গি তৎপরতা চালাচ্ছে, তারা দেশদ্রোহী ও ফৌদজারি অপরাধে অপরাধী। উভয়ের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অনুষ্ঠানে ধর্মীয় নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের ঈমাম মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ, শিয়া সম্প্রদায়ের নেতা মাওলানা সৈয়দ ইব্রাহিম খলিল রাজভী, মাওলানা আতাউল্লাহ, গোলাম মাওলানা নকশিবান্দি, পেট্রিক ডি রোজারিও, স্বামী ধ্রুবেশান্দ মহারাজ, শ্রী সত্যেন্দ্র নাথ, ওবায়দুর রহমান খান নদভী, অশোক বড়ুয়া। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার শেখ মারুফ হাসান সরদার।
আইজিপি এ কে এম শহীদুল হকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বিশেষ অতিথি ছিলেন ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।